তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার

তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন,তাহলে আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন তেজপাতা সম্পর্কিত সকল তথ্য সম্পর্কে। তাই উক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে সম্পূন্ন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি আপনার সমস্ত প্রশ্নের সঠিক সমাধান পেয়ে যাবেন।
তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার
পোস্টসূচীপত্রঃএই আর্টিকেলের মধ্যে শুধু তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বলা হয়নি। এছাড়া ও তেজপাতা সম্পর্কিত আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ও আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলো জানলে আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক তেজপাতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আরো নানান তথ্য সম্পর্কে।

ভূমিকা | তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার

আমাদের দেশের মানুষের কাছে খুবই পরিচিত একটি গাছ হচ্ছে তেজপাতা গাছ। এই গাছের পাতা আমরা মূলত মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এর রয়েছে বিভিন্ন ভেষজ গুণ। এই ভেষজ গুণের কারণেই এটি ঘরোয়া চিকিৎসায় বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তেজপাতা সিদ্ধ করে তার পানি খেলে অরুচি দূর হয়। আবার মাথাব্যথা দূর করতে ও তেজপাতা ও লবঙ্গ চা বেশ উপকারী। এছাড়াও মাড়ির ব্যথা বা ক্ষত সারাতে তেজপাতা সেদ্ধ পানিতে লবঙ্গ মিশিয়ে গাগল করলে উপকার পাওয়া যায়।

তেজপাতার গুনাগুন

রান্নাঘরের অতি প্রয়োজনীয় ভেষজ উপাদান হচ্ছে তেজপাতা। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে এর তুলনা নেই। শুধু কি তাই তেজপাতার আছে আরো অনেক গুন ।এর ভেষজ গুণ শরীর ও মনের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। শরীর ও মনের ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। চলুন জেনে নেয়া যাক এর কিছু গুনাগুনের কথা।
  • তেজপাতার বাকল থেকে যে সুগন্ধি তেল পাওয়া যায় তা সাবান উৎপাদনের করতে ব্যবহার করা হয়।।মাড়ির কতদূর করতে তেজপাতা ভূমিকা রয়েছে।
  • ঘামাচি সারাতে তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।
  • মাথা ব্যাথা ও মাইগ্রেনের মতন সমস্যা সারাতে তেজপাতার এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা যায় এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ব্যাথা বা ফোলা জায়গা উপশম করতেই তেলটি বেশ উপকারী।
  • কিডনির বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে তেজপাতা পানিতে সিদ্ধ করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • তেজপাতা অরুচি দূর করতে সাহায্য করে।

তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা 

তেজপাতার উপকারিতা

তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার
তেজপাতা একটি ঔষুধি পাতা। এটা একটি সুগন্ধযুক্ত পাতা ও বটে। এ পাতা আমরা বিভিন্ন সিদ্ধ জাতীয় খাবারের সুগন্ধ যোগ করতে ব্যবহার করে থাকি। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে এই পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক তেজপাতার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে-তেজপাতায় থাকা উপাদান ইনসুলিনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। দিনে অন্তত দুবার তেজপাতা গ্রহণ করলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে। তাই যারা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে আছেন তাদের জন্য তেজপাতা বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে।
  • হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে-রুটিন ও ক্যাফেক এসিড নামক দুটি উপাদান তেজপাতায়ে রয়েছে। এই উপাদানগুলো হাটের দেওয়াল কে মজবুত করে ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। কেননা কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
  • হজমে সাহায্য করে-কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে তেজপাতা খুবই উপকারী। এছাড়াও তেজপাতা স্বাভাবিক হজম শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে ও সাহায্য করে। এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিনকে বের করে দেয়। যাদের অতিরিক্ত প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে সেটা কমাতেও সাহায্য করে তেজপাতা। হজম রস তৈরিতে উদ্দীপক হিসেবে তেজপাতা কাজ করে। যার ফলে অন্ত্রের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে-তেজপাতা তে থাকে ফাইটো নিউক্লিয়াস ও ক্যাটচীন উপাদান যা ক্যান্সারের কোষ কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আবার তেজপাতা ক্যান্সারের কোষ কে ধ্বংস করতে ও সাহায্য করে। বেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে তেজপাতা দারুন উপকারি।
  • কিডনির পাথর চিকিৎসার জন্য-শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে বিশেষ করে কিডনির সমস্যা ও গ্যাসের সমস্যা তৈরি করে। তেজপাতা শরীরের ইউরিয়ার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে কিডনির পাথর হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • ক্ষত নিরাময় করতে-তেজপাতা থাকে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও মাইক্রো ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা ক্ষত সরাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। এছাড়া ও এটি ক্যান্ডিডার মত ছত্রাক সংক্রমণের বিরুদ্ধে ও কাজ করতে পারে।
  • অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে-অনেকে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভুগেন। তাদের জন্য নিয়মিত তেজপাতা চিবিয়ে খেলে পিরিয়ড নিয়মিত ও স্বাভাবিক হবে।
  • উদ্বিগ্নতা ও চাপ কমায় -তেজপাতার চা আপনার স্নায়ু শান্ত করে ও উদ্বিগ্নতা কমায়। আপনার যদি মন মেজাজ ভালো না থাকে তাহলে তেজপাতার চা খেয়ে দেখতে পারেন এতে মনে প্রফুল্ল আনবে এবং ভালো ঘুম হবে।
  • অতিরিক্ত ওজন কমাতে-অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য তেজপাতা বেশ উপকারী। প্রতিদিন পাঁচ গ্রাম তেজপাতা ও এক টুকরো আদা ২০০ মিলি লিটার পানিতে ফুটিয়ে চারভাগের একভাগ করে নিতে হবে। তারপর ফুটানো পানিতে মধু মিশিয়ে দিনে দুইবার পান করতে হবে। নিয়মিত পান করলে ওজন কমবে।
  • চুলের বৃদ্ধি ও খুশকি তাড়াতে-অনেকে মাথার খুশকির জন্য খুবই বিরক্তিতে রয়েছেন। কিন্তু আপনাদের তেমন জানা নেই যে এটা দূর করার জন্য হাতের কাছে ভালো একটি উপাদান রয়েছে। চুলের যত্নে তেজপাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।কয়েকটি তেজপাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করুন তারপর এটা ঠান্ডা করে নিন। এবারে পানি দিয়ে চুল ও মাথার স্কাল্প ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই একটি শ্যাম্পু করার পরে করবেন। মাথার ত্বক চুলকানোর জন্য তেজপাতা বেটে নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার স্কাল্প এ লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন, দেখবেন মাথার ত্বক চুলকানো কমে গেছে।
  • গলা খুসখুস ও কাশি কমাতে-ঘনঘন ঠান্ডায় আক্রান্ত হলে এবং কাশির সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যাকটেরিয়া তাড়াতে চমৎকারভাবে কাজ করে। কয়েকটি তেজপাতা গরম পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর কুসুম গরম পানিতে একটি কাপড় ভিজিয়ে বুক মুছে নিতে হবে। কয়েকবার এটা করতে হবে।তারপর দেখবেন আস্তে আস্তে গলার খুসখুসানি ও কাশি কমে গিয়েছে।
  • ব্যথা উপশমে-তেজপাতার অন্যতম গুণের মধ্যে রয়েছে প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করা। তেজপাতাতে রয়েছে ফাইটো নিউট্রিয়েনট উপাদান, যা প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে তেজপাতার এসেনশিয়াল অয়েল বেশ উপকারী।

তেজপাতার অপকারিতা

তেজপাতার উপকারিতা অনেক, কিন্তু এটার কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারিতা ও রয়েছে। গর্ভবতী মা ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য এটা নিরাপদ নয়। কারণ তেজপাতা খেলে গর্ভবতী মা ও স্তন্যদানকারী মায়েদের প্রসাবের ইনফেকশন ঘটাতে পারে। এছাড়াও সার্জারি রোগীদের জন্য দুই সপ্তাহ তেজপাতা খেতে নিষেধ করা হয়, কারণ এটি স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তেজপাতার পানি খাওয়ার উপকারিতা 

প্রতিদিন সকালে তেজপাতা ফোটানো পানি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এ পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বদ হজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে এই পানি বেশ উপকারী। এতে শরীরের ক্লান্তি দূর করে শরীরে শক্তি যোগায়। 
এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় নিয়মিত এটি খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়াও এই পানি নিয়মিত খেলে আমাদের ফুসফুস ও হৃদপিণ্ড সুরক্ষিত থাকে। চলুন জেনে নেই কিভাবে খেতে পারি তেজপাতা ফুটানো পানি। এক গ্লাস পানি ফুটিয়ে নিয়ে তাতে 

কয়েকটি তেজপাতা দিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর পানিটা হালকা ঠান্ডা হলে ছেঁকে নিতে হবে। এবার এই পানি কুসুম কুসুম গরম অবস্থায় পান করুন। এভাবে নিয়মিত খেলে বেশ উপকার পাবেন। আপনি চাইলে এই পানিতে আদা বা লেবুর রস মেশাতে পারেন।

তেজপাতার ধোয়ার উপকারিতা

তেজপাতা বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। তেজপাতার গুণের শেষ নেই। এর আরো কিছু উপকার পেতে হলে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে একটি তেজপাতা পুড়িয়ে ফেলুন দেখবেন মিষ্টি গন্ধে ঘর ভরে গেছে।এই সুগন্ধ শরীরও মনের জন্য খুবই উপকারী। এটা শরীর ও মনের নানা সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করবে। 
এছাড়াও তেজপাতা পুড়ার গন্ধ শারীরিক ক্লান্তি দূর করবে শরীরের ভেরিকোজ ভেন, গাটের ব্যথা, ভাইরাল ইনফেকশন ইত্যাদি থেকে ও মুক্তি দিবে। অন্যদিকে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে ও এই সুগন্ধ বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে মনে আসে মানসিক শান্তি। তাই খুব সহজেই শরীরের এবং মনের প্রশান্তির জন্য আপনি 

একটি তেজপাতা পুড়িয়ে তেজপাতা ধোয়ার নিতে পারেন। আবার যাদের বুকে কফ জমা থাকে তাদের জন্য তেজপাতা পোড়ানো ধোয়া বেশ উপকারী। যারা সর্দি কাশিতে ভুগছেন তারা তেজপাতা জ্বালিয়ে তার ধোঁয়া হাঁ করে মুখ দিয়ে টানুন এতে বেশ আরাম পাওয়া যাবে। তেজপাতার ধোয়া প্রাকৃতিক এয়ার পিউরিফায়ার। 

এটি নিয়মিত ঘরে জালানো হলে ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ হবে এবং পোকামাকড়ের উপদ্রব কমবে। মানসিক ক্লান্তির হাত থেকে মুক্তি পেতে তেজপাতার ধোয়া বেশ উপকারী। কেননা তেজপাতায় থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট মন ও শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তেজপাতার ধোয়া ভালো ঘুমের জন্য বেশ উপকারী।

তেজপাতার বিড়ির উপকারিতা

তেজপাতা খুসখুসে কাশি এবং শ্বাসকষ্টের জন্য বেশ উপকারী। এটি খুব সহজে রেস্টুরেন্টরি সিস্টেমকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। বিড়ি খেলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি হয় কিন্তু তেজপাতার বিড়ি এটা আমাদের অনেক উপকারে আসে। তেজপাতার বিড়ি খুসখুসে কাশি এবং শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য একটি ঘরোয়া টোটকা। 
তেজপাতা চা খেলে যে কাশি কমে এটা অনেকেই কম বেশি আমরা জানি কিন্তু দ্রুত কাশি কমাতে পারে আরেকটি উপায় সেটা হল তেজপাতার বিড়ি। তেজপাতা বিড়ি বানিয়ে টা খেলে সেটা আমাদের বুকে জমে থাকা কফ পরিস্কার করতে সাহায্য করে। দুটি তেজপাতা নিয়ে একটার উপর আরেকটা রাখুন। এবার আস্তে আস্তে শরু করে মুড়িয়ে নিন বিড়ির মতো করে। 

এরপর একটা সুতো দিয়ে বেঁধে নিন রোল করা তেজপাতাটির মাথা আগুন ধরিয়ে নিভিয়ে নিন। এরপর পিছন দিক মুখ লাগিয়ে আস্তে আস্তে করে ধোয়া টানবেন। এটা কখনোই শিশুদের কাশি কমাতে ব্যবহার করবেন না।

রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার

তেজপাতা আমরা রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি। মসলা হিসেবে এটি খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এছাড়া ও তেজপাতার রয়েছে অনেক রকম গুণ। সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে তেজপাতার রয়েছে অনেক কার্যকরী ভূমিকা। তাই আপনি নিজেকে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে তেজপাতার সাহায্য নিতে পারেন। 
রূপচর্চাতে তেজপাতার জুড়ি মেলা ভার। কারণ এ জাদুকরি পাতার রয়েছে অনেক গুণ। এটি ত্বক, চুল এবং এর পাশাপাশি দাঁতের ও যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন জেনে নেয়া যাক রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার সম্পর্কে।
  • চুলের যত্নে তেজপাতা- চুলকে সুন্দর করার জন্য তার আগে খেয়াল রাখতে হবে মাথার ত্বক যেন ভালো থাকে। তাইতো চুলকে সুন্দর রাখার জন্য মাথার ত্বককে রাখতে হবে খুশকি মুক্ত। মাথার ত্বককে খুশকি মুক্ত এবং চুলকে সুন্দর ও নরম মসৃণ করে তুলতে তেজপাতার গুরুত্ব রয়েছে। কয়েকটি তেজপাতা নিয়ে এক লিটার পানিতে অল্প আঁচে ফুটিয়ে নিন। পানির রং পরিবর্তন হলে এবং পানি শুকিয়ে হাফ লিটার হলে এই পানি ঠান্ডা করুন এবং একটি স্প্রে বোতলে ঢেলে নিন। এই মিশ্রণটি প্রতিদিন গোসলের আগে মাথার ত্বকে এবং সমস্ত চুলে ভালো করে স্প্রে করে লাগিয়ে নিন। একঘন্টা পরে স্বাভাবিক পানিতে গোসল করে নিন। মাথার ত্বকের ও চুলের যে কোন সমস্যার সমাধানে এই পানির স্প্রে মাথার ত্বক এবং চুলে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যাবহারে এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনি সমাধান পেয়ে যাবেন। এটি চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবেও কাজ করবে। শ্যাম্পুর পরে এই পানিটা ব্যবহার করলে কন্ডিশনার এর কাজ করবে। এছাড়াও এটি মাথার উকুন দূর করতে ও সাহায্য করে। তেজপাতার তীব্র গন্ধ এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি মাথা থেকে উকুন দূর করতে সাহায্য করে। আবার তেজপাতার গুঁড়ো নিয়ে সরাসরি মাথার চামড়াতে লাগাতে পারেন এতেও উকুন দূর হবে। চুল পড়ার সমস্যা সমাধানেও তেজপাতার গুরুত্ব রয়েছে। মোটকথা চুল পড়া থেকে শুরু করে চুলের খুশকি, চুলের রুক্ষতা এবং চুলের উকুন সমস্ত কিছু দূর করতে তেজপাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • দাঁতের যত্নে-অনেকের দাঁত হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে, কোন কিছুতেই সেটা সাদা ঝকঝকে চকচকে হতে চায় না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য তেজপাতা গুড়ো ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন ব্রাশ করার সময় পেস্ট এর সঙ্গে তেজপাতার গুঁড়ো দিয়ে দাঁত মাজার অভ্যাস করলে কিছুদিন পরে দেখবেন আপনার দাঁতের উজ্জ্বলতা ফিরে এসেছে।
  • ত্বকের যত্নে- অনেকে ব্রণের সমস্যায় ভুগেন যা কোন কিছু ব্যবহার করেই দূর হতে চায় না। ব্রণের সমস্যা সমাধানের জন্য তেজপাতার সঙ্গে চন্দন বেটে মুখে লাগালে দ্রুত কমে যায় এবং ব্রণের দাগ কালো ছোপ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।যার ফলে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও সতেজ। তেজপাতা টোনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন পানিতে তেজপাতা ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করার পর স্প্রে বোতলে রেখে দিন। প্রতিদিন এই পানি দিয়ে একবার করে ম্যাসাজ করুন। অনেকের ত্বকে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণও দেখা দেয়। এই সমস্যার সমাধানের জন্যও তেজপাতা খুবই উপকারী। এর জন্য চার কাপ পানিতে কয়েকটি তেজপাতা ফুটিয়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচবার করে খেতে পারেন, এতে ত্বক হয়ে উঠবে দীপ্তিময়। এছাড়াও গায়ের দুর্গন্ধ এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতেও তেজপাতা কার্যকর। তেজপাতা ও চন্দন একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে এই সমস্যা থেকে আপনি পরিত্রাণ পেতে পারেন।

লেখকের শেষকথা | তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা | রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার 

প্রিয় পাঠক আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনযোগ সহকারে সম্পূন্ন পড়ে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, তেজপাতার গুনাগুন ,তেজপাতার পানি খাওয়ার উপকারিতা , তেজপাতার ধোয়ার উপকারিতা, তেজপাতার বিড়ির উপকারিতা

 এবং রূপচর্চায় তেজপাতার বিস্ময়কর ব্যবহার সম্পর্কিত সকল তথ্য।আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন তেজপাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরে।এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো নতুন নতুন তথ্য জানতে এই ওয়েবসাইটি নিয়মিত ফলো করুন।
আর আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url