মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম-সম্পর্কে জানুন

আপনি কি মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। কেননা জিরা সম্পর্কে জিরার ক্ষতিকর দিক সমূহ এবং জিরার সাথে সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় নিয়ে আমরা এখন আলোচনা করব। আপনি যদি জিরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম
পোস্টসূচীপত্রঃআর্টিকেলের ভেতর মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কেই শুধু বলা হয় নাই। এখানে জিরা সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে ও আলোচনা করা হয়েছে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক সমস্ত বিষয়ে।

ভূমিকা-মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম-সম্পর্কে জানুন

মেদ কিংবা বাড়তি ওজন এটা সবার কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত। তাই একটু ওজন বাড়লেই সবাই চিন্তায় পড়ে যান। কিভাবে কমাবেন এই বাড়তি মেদ বা ওজন। চিন্তার কারণ নেই আমার এই আর্টিকেলটি পরলে আপনি মেদ কমানোর সহজ গাইডলাইন পেয়ে যাবেন। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো।

জিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

জিরা খাওয়ার অনেক নিয়ম রয়েছে। আপনি কি জানেন জিরা কিভাবে খেলে আমাদের বেশি কাজে দেয়। যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক। জিরা অনেকভাবে আমরা খেতে পারি। তবে চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক গুণ বেশি। আর সেই গুণের মধ্যে চলুন দেখে নেই কি কি আছে।
  • রাতের ঘুম ভালো হয়
  • শ্বাসযন্ত্রের উন্নতি করে
  • হজমের সাহায্য করে কনস্টিপেশন (Constipation) থেকে রক্ষা করে
  • টক্সিন দূর করে
  • শরীরের রক্তস্বল্পতার চিকিৎসায় সাহায্য করে
  • স্মৃতিশক্তি বাড়াই
  • ত্বক পরিষ্কারে সাহায্য করে

খালি পেটে জিরা পানি খাওয়ার উপকারিতা

জিরার কার্যকারিতা আমরা অনেকেই জানিনা। খালি পেটে জিরা পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। হজম শক্তি বাড়ানো থেকে শুরু করে, ত্বকের যত্ন, চুলের যত্ন, ওজন কমানো নানান রকম গুণে ভরা এই জিরাতে। এতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট। 
এই এটি অক্সিডেন্ট হজম শক্তি বাড়িয়ে মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ফ্যাট বার্নিংয়ে ও এদের ভূমিকা অতুলনীয়। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে খালি পেটে জিরা পানি খাওয়ার উপকারিতা কতটুকু।

জিরা কিভাবে খেলে ওজন কমে

জিরা কিভাবে খেলে ওজন কমে এটা আমরা কম বেশি সকলেই জানি। কিন্তু তবুও জানার শেষ নেই। ঠিক মত হয়তো মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা জানিনা। তাইতো আজকে আমি জানানোর চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে কিভাবে আমরা জিরা খেতে পারি। বেশ কয়েক ভাবে জিরা খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। রাতে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ জিরা ভিজিয়ে সারা রাত রেখে সকালে সেই পানিটা ছেঁকে মধু মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত ওজন কমবে।

মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম-সম্পর্কে জানুন

জিরা প্রাচীনকাল থেকে মসলা হিসেবে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার হয়ে আসছে। রান্নার স্বাদ বাড়াতে এটা ব্যবহার করা হচ্ছে প্রাচীনকাল থেকে। এটা একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এটা সাধে, গন্ধে এবং ঔষধি গুনে ভরপুর। জিরার উৎপত্তিস্থল মিশর দেশ। 

জিরায় রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। জিরাতে আছে থাইমল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তেল। এ সকল উপাদান লালা গ্রন্থীদের উদীপ্ত করে যা হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে আর দুর্বল পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করে তোলে।এতে ক্যালরি থাকে বেশি পরিমাণে। এছাড়াও রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। এটি শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 
বদহজম এর সমস্যা থাকলে জিরা দিয়ে তৈরি চা পান করলে বদহজমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম রয়েছে। সে সকল নিয়মগুলো সঠিকভাবে মানলে অবশ্যই মেদ কমবে। মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম হলো প্রতিদিন খাবারের জিরার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। 

সিদ্ধ করা কিছু সবজির সাথে আদা কুচি লেবুর রস এবং জিরার গুঁড়া মিশিয়ে রাতে খাবার হিসেবে খান। আদা কুচি ও রেবুর রস শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। আরে সঙ্গে জিরা মিশিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এটা পেটের মেয়াদ কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া সারা রাত জিরা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটা খালি পেটে খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

জিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

জিরায় আছে নানান পুষ্টিগুণ। জিরা আমাদের শরীরের অনেক উপকারে আসে। এর উপকারিতার শেষ নেই। চলুন তাহলে এবার দেখে আসি জিরা আমাদের শরীরে কি কি উপকার করে।
  • এক গ্লাস জিরার সাথে পাঁচ গ্রাম দই মিশিয়ে প্রতিদিন নিয়মিত খান এতে আপনার ওজন কমবে।
  • দুই চামচ জিরা সারা রাত এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে সেই ভেজানো জিরা পানিসহ সিদ্ধ করে খাবেন। তাছাড়া পানি ছেঁকে তার মধ্যে একটু লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পানিটি খাবেন। এতেও ওজন কমাবে।
  • জিরা ফেটে গ্যাস জমাতে দেয় না ও বদহজম থেকে মুক্তি দেয় এটা হজম শক্তি বাড়ায়।
  • নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে জিরা পানি খাওয়া খুব উপকার। এতে ভালো ঘুম হয়। যাদের রাতে ঘুম হয় না তারা এটা নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।
  • নিয়মিত জিরা খেলে শরীরের ডায়াজেস্টিভ এনজাইম এর উৎপাদন বেড়ে যায়। তার সাথে হাতে লিভারের টক্সিক উপাদান ও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই লিভারের কার্যক্ষমতা দ্রুত বাড়ে। সেজন্য হজম শক্তি বেড়ে যায়।
  • শরীরে মিউকাসের মাত্রা বাড়া কমায়। জিরাতে এমন কিছু উপাদান আছে যা ফুসফুসের কর্মক্ষমতা ঠিক রাখে। শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা কমায়।
  • জিরার পানি শরীরের পানি স্বল্পতা দূর করে। তাপমাত্রা ও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • রুক্ষ চুলকে সতেজ করে। এক গ্লাস পানির সাথে এক চামচ জিরা পাউডার ও একটি ডিমের কুসুম মিশিনে চুলে লাগান। এতে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে।
  • ঠান্ডা লাগা ও জ্বরের প্রকোপ কমাতে জিরার ভূমিকা রয়েছে।

জিরার ক্ষতিকর দিক

জিরার তেমন উপকার রয়েছে তেমনি এর ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। কোন জিনিসই বেশি ভালো না। সব কিছুরই একটা পরিমাণ রয়েছে। আর এই পরিমাণের চেয়ে বেশি হলে তার ক্ষতি ও হবে।তাই মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম মেনে জিরা খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত জিরা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে কমে যেতে পারে এর ফলে রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যেতে পারে। জিরা খেলে তা রক্তকে তরল করে দেয়। অতিরিক্ত জিরার তেল প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া বমি বমি ভাব ও দেখা দিতে পারে।

জিরা পানি তৈরির নিয়ম

জিরা পানির তৈরির কিছু নিয়ম রয়েছে। আমরা কয়েকভাবে জিরা পানি তৈরি করতে পারি।

প্রথম ধাপ

উপকরণ
  • এক গ্লাস পানি,
  • এক চা চামচ জিরা,
  • এক চামচ মধু
প্রস্তুত প্রণালী
মাঝারি আঁচে পানি গরম করুন। তারপর এতে জিরা দিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার পানি থেকে মধু মিশিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেল জিরা পানি।

দ্বিতীয় ধাপ

  • উপকরণ
  • জিরার গুড়া,
  • আখের গুড়,
  • চিনি,
  • পানি,
  • তেঁতুলের কাথ,
  • লেবুরস
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে ব্লেন্ডারে এক গ্লাস পানি দিয়ে তাতে দুই চামচ তেতুলের কাথ, এক চামচ চিনি, পরিমাণ মতো লেবুর রস ও এক চামচ জিরার গুড়া দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। হয়ে গেল জিরা পানি।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আপনি নিশ্চয়ই আমাদের আজকের আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ে জানতেও বুঝতে পেরেছেন , মেদ কমাতে জিরা খাওয়ার নিয়ম, খালি পেটে জিরা পানি খাওয়ার উপকারিতা ও জিরার ক্ষতিকর দিক সমূহ সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে। 
আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান মতামতটি আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে তথ্যবহুল এবং উপকারী বলে মনে হলে আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়ের মাঝে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন। 

এছাড়াও আপনি যদি ভেষজ বিষয়ক নতুন নতুন আরো তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তবে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url