চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা-ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা, এই বিষয় সম্পর্কে আপনি কি খোঁজাখুঁজি করছেন। চিন্তার কারণ নেই আমার এই আর্টিকেলের মাঝে চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে আমার আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা-ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম
পোস্ট সূচিপত্রঃএখানে শুধু চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা এই বিষয় সম্পর্কেই বলা হয় নাই। ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম ও ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় সেই বিষয় সম্পর্কে ও বলা হয়েছে।

ভূমিকা-চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা-ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম

চুলের যত্নে প্রসাধনি ও প্রাকৃতিক উপাদানের অভাব নাই। তবে প্রসাধনির চাইতে ঘরোয়া ভাবে আমরা খুব সহজেই চুলের যত্ন নিতে পারি। হাতের নাগালেই রয়েছে বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতি। তবে এর মাঝে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিটি হল ভাতের মাড়। চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা অনেক। আর এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও নেই। 
ভাত রান্নার সময় একটু বেশি করে পানি দিয়ে দিন। তারপর চাল ফুটে ভাত রান্না হয়ে গেলে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। আর সেটাই হলো ভাতের মাড়। চুলের যত্নে এই ভাতের মাড়ের ভূমিকা অনেক। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা সহ আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে।

চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা

চুলের যত্নে আমরা কত কিনা করে থাকি। কিন্তু চুলে ভাতের মাড় ব্যবহার। হ্যাঁ ভাতের মাড় চুলের জন্য খুবই উপকারী। চুল দ্রুত লম্বা করতে ভাতের মাড় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া ত্বকের যত্নে ও ভাতের মাড়ের ভূমিকা কম নয়। চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা অনেক। চলুন জেনে নেই চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার।
  • ভেজা চুলে ভাতের মাড় লাগিয়ে রাখুন।১৫/২০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন।
  • ভাতের মাড়ের সাথে একটু পানি মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর এই পানি মাথায় দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তারপর পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
  • ভাতের মাড়ে থাকে অ্যামিনো এসিড। এছাড়াও এতে আরো রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। তাই ভাতের মাড় ব্যবহারে চুল খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়, চুল পড়া কমায় যা অন্য কোন উপাদান ব্যবহারে পাওয়া যায় না।এটা সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করতে পারেন।
  • চুলের আগা ফাটা একটা বিরাট সমস্যা। বিভিন্ন কারণে চুলের আগা ফাটতে পারে। ভাতের মাড়ে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের ক্ষতি থেকে চুলকে রক্ষা করে চুলের আগা ফাটা কমাতে সহায়তা করে। চুলের আগা ভাতের মাড়ের মধ্যে বিশ মিনিট ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের আগা ফাটা কমবে। নিয়মিত চুলের আগায় ভাতের মাড় ব্যবহার করলে চুলের আগা ফাটা কমে যাবে।
  • ভাতের মাড় হল প্রাকৃতিক কন্ডিশনার যা ব্যবহারে চুলের শুষ্ক ও রুক্ষ ভাব কমে যায়। চুল হয় ঝলমলে। এটা ব্যবহার করলে শ্যাম্পু করার পরে আলাদাভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না।
  • চুলকে কোমল ও উজ্জ্বল করে ভাতের মাড়।এর জন্য অন্য কোন হেয়ার প্যাক এর প্রয়োজন নাই যা ব্যবহার করতে অনেক ঝামেলা ও সময়ের প্রয়োজন। তাই কম সময়ে চুলকে উজ্জ্বল করতে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন ভাতের মাড়।
  • শীতকালে চুলের সবচাইতে বড় সমস্যা হলো খুশকি। প্রায় সারা বছরেই কম বেশি খুশকি থাকে। তবে সেটা শীতকালে একটু বেশি দেখা দেয়। চিন্তার কোন কারণ নেই খুব সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। ভাতের মাড় দিয়ে নিয়মিত চুল ধুয়ে নিলে খুশকি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কারণ ভাতের মাড়ে থেকে মাথার ত্বক তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করবে, যার ফলে মাথার ত্বক আদ্রতা পাবে এতে মাথায় খুশকি সহজে দেখা দেবে না।
  • এলোভেরা জেল ভাতের মাড়ের সাথে মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর চুল পানি দিয়ে ধুয়ে ভেজা চুলে মিশ্রণটি লাগাতে হবে। তারপর চুল ধুয়ে ফেলুন।এতে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার এর কাজ করবে।
  • চুলের রং করার কাজে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। ভাতের মাড়ের সাথে খানিকটা কফির গুঁড়া মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। তারপর সেই প্যাক চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুইবার এটা ব্যবহার করলে চুলে হালকা বাদামী রং আসবে।
  • ভাতের মাড়ে থাকে স্টার্চ এবং অ্যামিনো এসিড যা চুলের শুষ্ক ও রুক্ষতা দূর করে চুলকে করে নরম।
  • এছাড়াও এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন। এতে থাকা ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই চুলকে চকচকে ঝলমলে করে।
  • এতে ইনোসিটল নামে একটা যৌগ রয়েছে এর ফলে চুল মজবুত ও চুল পড়া রোধ করতে সহায়ক হয়। চুলের জন্য ভাতের মাড় খুব উপকারী।

ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়

ঘন কালো লম্বা উজ্জ্বল চুল সবারই কাম্য। কিন্তু সেই চুল যদি রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুল পড়া সমস্যা বেড়ে যায় তখন খুব চিন্তায় পড়ে যায় সবাই। তবে খুব সহজেই এই চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন সামান্য একটু যত্ন নিয়ে। আর সেটা হচ্ছে চুলে ভাতের মাড় এর ব্যবহার। চুলে ভাতের মাড় নিয়মিত ব্যবহারে চুল হবে ঝলমলে খুশকিমুক্ত ও লম্বা। তাহলে প্রিয় পাঠক আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় আর চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের উপকারিতা।

ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম

ভাতের মাড় আমরা কয়েকভাবে চুলে ব্যবহার করতে পারি।
  • ভাতের মাড় স্প্রে বোতলে ভরে মাথায় স্প্রে করতে পারি।
  • ভাতের মাড় সরাসরি মাথায় ব্যবহার করতে পারি।
এটা নিয়মিত ব্যবহারে চুল হবে লম্বা ও সুন্দর।
ব্যবহার
ভাতের মাড় যে কোন সময় চুলে ব্যবহার করা যেতে পারে। চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিয়ে তারপর ভাতের মাড় স্প্রে বা সরাসরি মাথায় ব্যবহার করুন। তারপর মাথার তালুতে একটু মেসেজ করুন তেল দেওয়ার মতন করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে নিন।

চালের পানি চুলে দিলে কি হয়

নিয়মিত চালের পানি চুলে দিলে চুল হবে লম্বা, ঘন ও শক্ত। এটা ব্যবহারে চুলের অনেক পুষ্টি হবে এবং চুলের সকল সমস্যা থেকে চুলকে রক্ষা করা যাবে।
চুলের সুস্থতা
চালের পানি নিয়মিত ব্যবহারে চুলের সুস্থতা বজায় থাকে। চালের পানিতে থাকা ভিটামিন ও অ্যামিনো এসিড চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। চালের পানিতে থাকা নায়াসিন চুলের ফলিকল কে সুস্থ রাখে যার ফলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে আর মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়লে চুল ও সুস্থ থাকবে।
চুলের বৃদ্ধি
চুলের বৃদ্ধিতে চালের পানির ভূমিকা অনেক। থাকা সকল পুষ্টি উপাদান চুলের বৃদ্ধি ঘটায়।
উজ্জ্বলতা
রুক্ষ চুলকে ঝলমল করতে চালের পানির তুলনা হয় না। রোদ আর ধুলা, বালিতে চুল হয়ে যায় মলিন, রুক্ষ ও নির্জীব। চুলের এই নির্জীবতা কমিয়ে চুলকে সতেজ ও উজ্জ্বল করতে চালের পানির গুরুত্ব অপরিসীম।
আগা ফাটা কমায়
নিয়মিত চালের পানি ব্যবহারে চুলের আগা ফাটা কমে।
সুরক্ষিত রাখে 
চালের পানিতে থাকে খনিজ উপাদান। যা চুলকে কোমল ও মসৃণ রাখে। যার ফলে চুলের জট কম হয়।
সুতরাং চুলের যত্নে চালের পানির কার্যকারিতা অনেক। তাই চালের পানি নিয়মিত চুলে ব্যবহার করতে হবে। চুল ভালো রাখতে বাজারের রাসায়নিক উপাদান বাদ দিয়ে চালের পানির ব্যবহার উপকারী।

চুলে চালের পানি ব্যবহারের নিয়ম

চুলের যত্নে ভাতের মাড় যেমন কার্যকরী তেমনি চালের পানি ও কার্যকরী। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ চাল ধোয়া পানি চুলের যত্নে ব্যবহার করে আসছে। কেননা চালের এই পানিতে রয়েছে অনেক গুণ। এতে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ফলিক এসিড ও ম্যাগনেসিয়াম।এটা চুলে কন্ডিশনারের কাজ করে। এটা ব্যবহারে চুল হবে ঘন ও লম্বা।
  • এক মুঠো চাল নিয়ে এটা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর একটি বাটিতে পরিমাণ মত পানি দিয়ে এটা ভিজিয়ে রাখতে হবে যতক্ষণ না এই পানি ঘন ও ফ্যাকাসে সাদা রঙ্গের না হয়। এখন চাল থেকে পানি ছেঁকে নিতে হবে। ছাঁকা পানি ১২ ঘন্টা পর্যন্ত রেখে তারপর একটি স্প্রে বোতলে ভরে ব্যবহার করতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের আজকের আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ে জানতেও বুঝতে পেরেছেন চুলে ভাতের মাড়ের উপকারিতা, চালের পানি চুলে দিলে কি হয়, চুলে চালের পানি ব্যবহারের নিয়ম ও ভাতের মাড় চুলে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত সকল তথ্য। 

আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে কেমন লাগলো তা আপনার মূল্যবান মতামতটি আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন। আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনার কাছে তথ্যবহুল এবং উপকারী বলে মনে হলে আর্টিকেলটি আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের মাঝে শেয়ার করুন। 

এছাড়াও আপনি যদি বিউটি টিপস বিষয়ক আর ও তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তবে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url