ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয়-সম্পর্কে জানুন

ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয় সেই সম্পর্কে আপনি কি জানার জন্য আগ্রহী। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা, আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমরা ভিটামিন সি (Vitamin-C) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।এখানে ভিটামিন সি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ও আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয়
পোস্টসূচীপত্রঃএই আর্টিকেলের ভেতর শুধু ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয় এ সম্পর্কে বলা হয় নাই। এছাড়াও ভিটামিন সি এর সাথে সম্পর্কিত নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে ও আলোচনা করা হয়েছে। এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন সি এর বিস্তারিত সকল তথ্য সম্পর্কে।

ভূমিকা-ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন সি আমাদের শরীরে অনেক প্রয়োজন তাই এই ভিটামিনের যাতে ঘাটতি না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত। ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করে। দাঁত ও মাড়ি শক্ত করে। ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া আমাদের প্রত্যেকের উচিত। শরীরে  ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয়দেখা দিলে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা হ্রাস পেতে পারে।আর থাইরয়েড হরমোন  কমে গেলে আবার থাইরয়ডিজম এর  সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ওজন কমে যায়, ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়,বুক ধরফর করে, খিদে কমে যায়, ত্বক জ্বালা করে ও চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়।

ভিটামিন সি কি

ভিটামিন-সি একটি পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। এর রাসায়নিক নাম এসকরবিক এসিড। এটি হচ্ছে একটি জৈব অম্ল যা শাক সবজি ফল সবকিছুতেই পাওয়া যায়। ভিটামিন সি তে প্রচুর পরিমানে এন্টি অক্সিডেন্ট ও রয়েছে। প্রতিটা ভিটামিনই আমাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এর মধ্যে ভিটামিন সি হল একটি।

ভিটামিন সি এর কাজ এবং উপকারিতা কি

ভিটামিন সি আমাদের দেহের অনেক কাজে লাগে। ভিটামিন সি এর কাজ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানলে আমাদের দেহে ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাব দেখা দিবে না। এটা আমাদের দেহের ত্বক, চুল ও দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি আমাদের দেহে অক্সিডেন্টের ও কাজ করে। 

যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ায় এবং ক্যান্সার ও হৃদ রোগসহ সমস্ত রোগের ঝুকি কমায়।আবার ভিটামিন সি আমাদের দেহের আয়রন শোষণেওসহায়তা করে।সাধারণ সর্দি কাশি হলে ভিটামিন সি খুব উপকারী ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি হাড়কে ভালো রাখে। এটা হাড়কে ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা থেকে রক্ষা করে।
এদিকে মেয়েদের মেনোপজ এরসময় ভিটামিন সি এর গুরুত্ব অপরিসীম।তাই এই সময়ে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।যাতে ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে দেখা না দেই। ভিটামিন সি তে যে  এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তা চোখের রক্ত চলা চল স্বাভাবিক রাখে চোখকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এছাড়াও কাটা ছেঁড়া ও ক্ষত শুকাতে ভিটামিন সি এর গুরুত্ব রয়েছে।এটি ইমুউন সিস্টেমের কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং বেশ কয়েকটি এনজাইনের কাজ করার জন্য ও প্রয়োজন। মোট কথা ভিটামিন সি আমাদের শরীরে অনেক কাজ করে এবং এর উপকারিতা ও অনেক। তাই প্রতিদিন আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি খাওয়া উচিত।

ভিটামিন সি এর উৎস

সাধারণত টক জাতীয় বিভিন্ন ফলে ভিটামিন সি রয়েছে।যেমন- লেবু, কমলা লেবু, আমলকি, জলপাই, আনারস আর কাঁচামরিচ, ব্রকলি, ফুলকপি ক্যাপসিকাম এগুলোতে ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।গবেষণা থেকে দেখা গেছে একজন পূর্ণ বয়স্ক নারীর দৈনিক ৭৫ মিলিগ্রাম আর একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষের দৈনিক ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া প্রয়োজন।

ভিটামিন সি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি

প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ভিটামিন সি খাওয়া উচিত নয়। কারণ ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে যেমন দেহে নানা সমস্যা দেখা দেই,ভিটামিন সি এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি ভিটামিন সি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত কোন জিনিসই ভালো নয়। সেজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন সি গ্রহণ করা আমাদের সবারই উচিত। অতিরিক্ত ভিটামিন সি খেলে শরীরে যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সেগুলো হলোঃ
  • বমি বমি ভাব
  • পেটে ব্যথা
  • মাথা ঘুরা
  • এসিডের সমস্যা
  • ডায়রিয়া
  • ত্বকের র্র্যাশ
  • দাঁতে ব্যথা
  • এলার্জি সমস্যা
  • ভিটামিন বি১২ এর মাত্রা কমে যাওয়া ইত্যাদি নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন সি তে রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টি অক্সিডেন্ট যা কোলাজেন উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কোলাজেন হচ্ছে একটি প্রোটিন তা স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বা স্কার্ভি রোগ হতে পারে। এছাড়া ও ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে শরীরে ক্লান্তি বোধ দেখা দেই।

ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে দেহে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যাওয়া, অবসন্নতা ও মেজাজ খিটখিটে হয়।ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে ওজন কমে যাওয়া, শরীরে কালো ছোপ ছোপ দাগ, ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যাওয়া বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার

লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত লেবু খেলে এসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়।লেবু ছাড়াও আরো যে সব শাকসবজি বা ফল এ রয়েছে ভিটামিন সি। সেগুলো হলো: পাকা পেঁপে, কাচা আম,পেয়ারা, ব্রকলি,শাক,আলু ইত্যাদি।এই খাবার গুলো থেকে আমারা প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমান ভিটামিন সি পেতে পারি আর ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাব ও দূর করতে পারি।

ভিটামিন সি কি তাপে নষ্ট হয়

ভিটামিন সি কি তাপে নষ্ট হয় এই সম্পর্কে চলুন এবার কিছু জেনে নেই।ভিটামিন সি হচ্ছে একটা জৈব অম্ল। যা কাঁচা শাকসবজি ও ফলমূলে পাওয়া যায়। আগুনের তাপে ভিটামিন সি এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ভিটামিন সি জাতীয় সবজি কম আগুনের তাপে হালকা সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত তাহলে এর পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ নষ্ট হবে না। 
রান্না করে খাবার চাইতে কাঁচা সব ফল ভালো করে পরিষ্কার করে ধুয়ে খাওয়া উত্তম। তাহলে এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যাবে আর তাতে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী ভিটামিন সি ও পাওয়া যাবে। এটা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে ভিটামিন সি তাপে নষ্ট হয়।

ভিটামিন সি খাওয়ার নিয়ম

দৈনিক ভিটামিন সি প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের জন্য ৮০ মিলিগ্রাম এবং পুরুষদের জন্য ৯০ মিলিগ্রাম।তবে স্তন্যপায়ী মায়েদের জন্য ১০ থেকে ২০ গ্রাম বেশি দিতে হবে। এটা ভিটামিন সি এর সুপারিশকৃত মাত্রা।

লেখকের মন্তব্য

ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয় এই সম্পর্কে আলোচনা করতে গিলে ইতিমধ্যে আমরা ভিটামিন-সি সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এই আর্টিকেলের মাঝে আলোচনা করেছি। ভিটামিন-সি কি,কোন ফলে ভিটামিন-সি আছে,ভিটামিন সি কখন খেতে হয়, ভিটামিন সি (Vitamin-C) এর অভাবে কি হয় ভিটামিন-সি এর কাজ ও উপকারিতা, ভিটামিন সি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন বিষয়গুলো জেনেছি। 
একজন মানুষ হিসেবে আমাদেরকে অবশ্যই যে কোন খাবার খাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে। কারণ বিষয়গুলো জানা আমাদের সকলেরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি যদি নিয়মিত এই ধরনের স্বাস্থ্যমূলক তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ফলো করুন। আর পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url