কুষ্টিয়া জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
ভূমিকা- কুষ্টিয়া জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
কুষ্টিয়া জেলার পূর্ব নাম কি ছিল
বাংলাদেশের জেলার সংখ্যা ৬৪ তার মধ্যে কুষ্টিয়া অন্যতম। ১৯৪৭ সালের আগে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল কুষ্টিয়া। দেশ ভাগের ফলে কুষ্টিয়া পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা হয়েছে আর তারপর থেকে কুষ্টিয়া বাংলাদেশের অংশ। কুষ্টিয়ার প্রধান শহর হচ্ছে কুষ্টিয়া শহর। শহরের দিক থেকে কুষ্টিয়া বাংলাদেশের ১৩ তম বৃহত্তম শহর।
কুষ্টিয়া জেলার নামকরণের ইতিহাস
কুষ্টিয়া জেলার পৌরসভা কয়টি ও কি কি
কুষ্টিয়া জেলার পৌরসভা রয়েছে পাঁচটি।যথা:
- কুষ্টিয়া পৌরসভা
- কুমারখালী পৌরসভা
- খোকসা পৌরসভা
- মিরপুর পৌরসভা ও
- ভেড়ামারা পৌরসভা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কুষ্টিয়া কত নম্বর সেক্টরে ছিল
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কুষ্টিয়া ছিল ৮ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। কুষ্টিয়া, যশোর, দৌলতপুর, সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত খুলনা জেলা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ ছিল এই ৮ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী আর আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন এম এ মঞ্জুর। এই সেক্টরের আন্ডারে ছিল আরো সাতটি সাব সেক্টর। সেই সময় পাকিস্তানি সেনারা কুষ্টিয়া জেলা স্কুলকে তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেছিল।
কুষ্টিয়া জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় তিনি ইতিহাসবিদ, আইনজীবী, সাহিত্যিক এবং বাংলা ভাষায় ইতিহাস রচনায় পথিকৃৎ। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। হরিনাথ মজুমদার যিনি সাময়িক পত্রসেবী, সমাজ বিপ্লবী ও বাউল কবি। তিনি কুমারখালীতে জন্মগ্রহণ করেন।
কুষ্টিয়া জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
কুষ্টিয়া জেলার বিখ্যাত খাবার
বৃহত্তম কুষ্টিয়া অঞ্চলের বিখ্যাত খাবার হচ্ছে কুলফি মালাই।এ মালাই এর অতিরিক্ত স্বাদের কারণে কুষ্টিয়ার এই কুলফি মালাই সারাদেশের মধ্যে বিখ্যাত।এটি বানাতে দুধ,বাদাম,কিসমিস,ডিম,কলাও বরফ ব্যবহার করা হয়। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে যেমন: লালন শাহের মাজার, মীর মোশারফ হোসেনের বস্তুভিটা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রভৃতি স্থানে এই মালাই সহজে পাওয়া যায়।
কুষ্টিয়া জেলার বিখ্যাত স্থান
কুষ্টিয়া জেলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হল লালন আখড়া বা লালন শাহের মাজার। এটা কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত। বছরে দুই সময়ে এখানে মেলা বসে। কার্তিক মাসের ১ তারিখ আর দোল পূর্ণিমার সময়। এই সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লালন ভক্তরা যান সেখানে।
আরো পড়ুনঃ পাকা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি এটাও বাংলাদেশের মধ্যে কুষ্টিয়ার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। এটি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নে অবস্থিত। ছোট বড় সব মিলে এখানে ১৮ টি কক্ষ রয়েছে। খুব সুন্দর মনোরম পরিবেশে সাজানো এই কুঠিবাড়ি। তাই বছরের প্রায় সময়ে এখানে মানুষ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পিকনিক করতে আসে।
মীর মশাররফ হোসেন যিনি বিখ্যাত উপন্যাসিক আর বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা। কুষ্টিয়ায় লাহিনী পাড়া মোড় নামক স্থানে তার বাড়ি অবস্থিত। তার এই জন্মস্থান কে ঘিরে বর্তমানে ওখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাদুঘর ও অডিটোরিয়াম রয়েছে। সেখানে তার ব্যবহার্য সব জিনিসপত্র রয়েছে।
কুষ্টিয়া শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে ঝাউদিয়া গ্রামে একটি মসজিদ রয়েছে। ইট, পাথর, বালি ও চিনা মাটি মিশ্রণে এ মসজিদটি অতীতের এক চমৎকার নিদর্শন। মসজিদটির শৈল্পিক কারুকার্য খুব সুন্দর। এই মসজিদটির মূল কাঠামোতে রয়েছে তিনটি গম্বুজ ও তিনটি দরজা।
কুষ্টিয়া শহরের ভেড়ামারা উপজেলায় অবস্থিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। লর্ড হার্ডিঞ্জের নামানুসারে এই ব্রিজের নামকরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। একশ বছরের পুরনো এই ব্রিজটি নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী। আর এই ব্রিজের পাশেই স্থাপিত হয়েছে লালন শাহ সেতু। বাউল সম্রাট লালনের নামে এ সেতুর নামকরণ করা হয়েছে। এই সেতুটি কুষ্টিয়া ও পাবনার মধ্যে যোগাযোগ সহজ করে দিয়েছে।
একই সাথে হার্ডডিংস ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু দেখতে প্রতিদিন অনেক পর্যটক যান সেখানে। আর সেই সাথে পদ্মার হিমেল হাওয়া ও চর দেখতেও সবাই নদীর ঘাটে যান। ব্রিজের নিচে রয়েছে সেই ঘাট। এখানে অনেক নৌকা রয়েছে। ঘন্টা চুক্তিতে মানুষ নৌকাতে উঠে ঘুরে ও নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করে।
বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url