যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা
যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা ও যাযাবর বা অতিথি পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত সকল তথ্য সম্পর্কে। তাই উক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে সম্পূন্ন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি আপনার সমস্ত প্রশ্নের সঠিক সমাধান পেয়ে যাবেন।
পোস্টসূচীপত্রঃএই আর্টিকেলের মধ্যে শুধু যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা সম্পর্কে বলা হয়নি। এছাড়াও যাযাবর বা অতিথি পাখির নামের সঙ্গে সম্পর্কিত আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলো জানলে আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক যাযাবর পাখির সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আরো নানান তথ্য সম্পর্কে।
ভূমিকা-যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা-যাযাবর বা অতিথি পাখির বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের রয়েছে ছয়টি ঋতু।আর এ ছয়টি ঋতুতে ছয়টি বৈশিষ্ট্য নিয়ে ধরা দেয় আমাদের কাছে। শীতে পিঠাপুলি, খেজুরের রস এসবের পাশাপাশি আরেকটি বৈশিষ্ট্য বেশ লক্ষণীয়।তা হল যাযাবর পাখি বা পরিযায়ী পাখির আগমন। প্রতিবছরের শীতের শুরুতে নানা দেশ হতে যাযাবর পাখিরা আসে আমাদের দেশে।বিচিত্র এই প্রকৃতিতে বিভিন্ন দেশ হতে যাযাবর পাখিরা আসে আমাদের প্রাকৃতিক শোভা বাড়াতে।
যাযাবর পাখি কাকে বলে
বিশেষ একশ্রেণীর পাখি বছরে নির্দিষ্ট একটি সময় অতিথি হয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে আসে ,তাদেরকে আমরা যাযাবর বা পরিযায়ী পাখি বলে থাকি। তারা মূলত অক্টোবর নভেম্বরের দিকে এ দেশে আসতে শুরু করে এবং শীতের শেষে মার্চ মাস থেকে নিজের দেশে যাত্রা শুরু করে।
যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা
যাযাবর পাখির মধ্যে বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে খঞ্জনা ,মাঠ চড়ুই ,চটক ,গাংচিল ,কসাই পাখি, ছোট সারস ,বড়সারস ,হেরণ ,নিশাচর হেরণ,কাদা খোচা, গায়ক রেন,পিন টেইল, তাছাড়া বিলুপ্তপ্রায় পালস ফিস, ঈগল (বুলুয়া) ইত্যাদি।এছাড়া ও আরো কিছু যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা নিচে দেওয়া হলো।যথাঃ
আরো পড়ুনঃ কুষ্টিয়া জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
- চখাচখি
- ডুবুরি পাখি
- রাঙ্গামুড়ী
- বড় সরালী
- বালু নাকুটি
- লাল ঘুঘু
- পাতি তিলিহাঁস
- পান্না কোকিল
- ফুলুরী হাঁস
- চাতক পাখি
- চিত্রা শালিক
- কালো হাঁস
- কালোঘাড় সাড়স
- কালো মানিকজোড়
- সাইবেরিয়ান সাড়স
- খুরুলে
- জলপিপি
- বাতারণ
- শাবাজ
- হলদে খঞ্চনা
- তিলে ময়না
- রামঘুঘু
এছাড়াও আরো অনেক প্রজাতির যাযাবর পাখি রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ জামের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা
বাংলাদেশের যাযাবর পাখির নামের তালিকা
বাংলাদেশের অতিথি পাখিদের মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, লেঞ্জ হাঁস, পাতারি হাঁস, বৈকাল হাঁস গিরিয়া হাঁস, ধূসর রাজহাঁস, বারোভুতি হাস এগুলো হলো অতিথি হাস আবার কতগুলো অতিথি কবুতরও আছে।যেমন : জল কবুতর ও গঙ্গা কইতর।
যাযাবর বা অতিথি পাখি কোন সময়ে আসে
সাধারণত বর্ষার শেষে এবং শীতের আগেই যাযাবর পাখি বাংলাদেশে আসা শুরু করে।আর মার্চ মাসের শেষ নাগাদ বা তারপর আবার ফিরে যায় পাখিগুলো।তাছাড়া এরা বসন্তে বা শরৎকালেও আসতে পারে।
যাযাবর বা অতিথি পাখি বাংলাদেশে কেন আসে
বাংলাদেশের হাওর, বিল ,খালের জলে অতিথি পাখিদের জন্য আছে পর্যাপ্ত খাবার উপকরণ।সে কারণেই সুদূর সাইবেরিয়া ,রাশিয়া এবং চীন থেকে প্রচুর পাখি অতিথি হয়ে বাংলাদেশে আসে।অতিথি পাখিগুলোর যে সকল দেশ থেকে আসে সেখানে প্রচন্ড শীত থাকে ফলে এরা তা সহ্য করতে পারে না।
আরো পড়ুনঃ বারোমাসি আমের জাত সমূহ - সম্পর্কে জানুন
আর খাবার সংগ্রহ ও করতে পারেনা শীতের জন্য। প্রচন্ড শীতে বরফের জন্য তাদের গায়ের পালক খসে খসে পড়ে যায়। তাই তারা অপেক্ষাকৃত কম শীত প্রধান দেশে চলে যায়।
শীতকালে যাযাবর বা অতিথি পাখি আসে কেন
যাযাবর পাখিরা প্রচন্ড ঠান্ডা সহ্য করতে না পেরে যেখানে শীত অপেক্ষাকৃত কম সেখানে চলে যায়। তাছাড়া এ সময় শীত প্রধান এলাকায় খাবারের ও প্রচুর অভাব থাকে। শীত প্রধান এলাকায় তাপমাত্রা অধিকাংশ সময় শূন্যেরও বেশ নিচে থাকে।তাই সেখানে গাছপালা জন্মাতেও পারেনা।
আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের মুচির উপকারিতা-সম্পর্কে জানুন
এজন্য সেসব শীত প্রধান এলাকার পাখিরা ঝাঁকেঝাঁকে আসতে থাকে কম ঠান্ডা অঞ্চলে। আর সেজন্য আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এত বৃদ্ধি পায় যাযাবর পাখিদের জন্য। যাযাবর পাখিরা আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে।
যাযাবর বা অতিথি পাখির বৈশিষ্ট্য
যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা দেখতে গিয়ে যেমন অনেক রকমের বিচিত্রতা দেখতে পাই তেম্যনি যাযাবর বা অতিথি পাখিদের মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন:
- এরা একদমই ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না। যেখানে বেশি শীত বা ঠান্ডা সেই এলাকায় তারা থাকতে পছন্দ করেন না।
- অতিথি পাখিরা দেখতে খুব সুন্দর হয়।এদের দেখলে মানুষজন প্রশংসা না করে পারেনা।
- হাওর বিল এদের খুবই পছন্দের জায়গা বছরের যে কোন একটা সময় এরা এসব জায়গায় যেতে খুব পছন্দ করেন।
- দল বেঁধে ঘুরতে এরা খুব পছন্দ করেন তাই এরা বছরের কোন এক সময় দল বেঁধে বেড়াতে যান।
- এরা একা থাকতে পছন্দ করেন না।দলবদ্ধ ভাবে থাকতে পছন্দ করেন।তাই সব সময় দলবদ্ধ ভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ান।তাছাড়া একা একা ঘুরতে গেলে রাস্তাও ভুলে যান।
যাযাবর পাখি কোথা থেকে আসে
যাযাবর পাখি সাধারণত আসে রাশিয়ার বিভিন্ন জায়গা ও হিমালয়ের পাদদেশ থেকে। শীতের শুরুর দিকে এরা বাংলাদেশে আসতে থাকে আর মার্চ এপ্রিলের দিকে ফিরে যায়।
যাযাবর বা অতিথি পাখি দেশের কোথায় বেশি দেখা যায়
অতিথি পাখি দেখা যায় বাংলাদেশের নীলফামারির নীলসাগর,নিঝুম দ্বীপ, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর ইত্যাদি অঞ্চলে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আশা আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনযোগ সহকারে সম্পূন্ন পড়ে জানতে ও বুঝতে পেরেছেন যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা সম্পর্কিত সকল তথ্য।আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন যাযাবর বা পরিযায়ী পাখির নামের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরে।
এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আরো নতুন নতুন তথ্য জানতে এই ওয়েবসাইটি নিয়মিত ফলো করুন। আর আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করবেন।
বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url