গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয়
প্রিয় পাঠক আপনি কি গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয় এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনি আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন গ্রীষ্মকালের উৎসব সম্পর্কিত সকল তথ্য সম্পর্কে। সেই সাথে আজকের আর্টিকেল থেকে গ্রীষ্মকালের উপকারিতা, গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য এই সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃআপনি যদি গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয় সেই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি পড়ে আপনি জেনে নিতে পারেন গ্রীষ্মকালের উৎসব সম্পর্কিত সকল সঠিক তথ্যগুলো। তাই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা-গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয়
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ।এই ছয়টি ঋতুর মধ্যে গ্রীষ্মকাল প্রথম।গ্রীষ্মকাল বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দুই মাস। বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য এই দুই মাস মিলে হয় বর্ষাকাল। এই সময় প্রচন্ড সূর্যের তাপে উত্তপ্ত হয়ে উঠে মাটি ,পানি শুকিয়ে যায় অনেক নদীর। পানির অভাবে মাটিতে ধরে ফাটল। বৈশাখের রুদ্র রুক্ষ পরিবেশ প্রকৃতিকে অনেকটা বিবর্ণ করে তোলে। বৈশাখ মাস সবচেয়ে উষ্ণতম মাস।
গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য
বাংলা বর্ষপুঞ্জের প্রথম দু মাস বৈশাখ জৈষ্ঠ্য এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল। ষড়ঋতুর রূপে গুণে ভরা আমাদের এই রূপসী বাংলা। এর এই বৈচিত্রময় রূপ বৈচিত্র প্রায় সারা বছর জুড়ে বাংলা প্রকৃতিতে বিরাজ করে। তবে গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্য কিছুটা ভিন্ন ধারার। চলুন তাহলে আমরা জেনে নেই গ্রীষ্ম ঋতুর বৈশিষ্ট্যগুলোঃ
- এই সময়ে কাঠ ফাটা রোদ্দুর আর অসহ্য গরম পড়ে।
- যখন তখন কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয় এ যেন প্রকৃতির এক রুদ্ররূপ।
- এতকিছুর পরেও সবাই যেন এর প্রকৃতির কাছে হার মানে। মুগ্ধ হয়ে যায় গ্রীষ্মের প্রকৃতির উপরে।
- এই সময় কিষকের ঘরে ঘরে উঠে আসে সোনালী ফসল।
- গ্রীষ্মের ফুল ও ফলে বিমুগ্ধ হয় সবাই।
গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয়
গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয় তা বলতে গেলে এর কোন শেষ নেই। চারিদিকে ঝড় বৃষ্টির মাঝে ও থেমে থাকে না এই গ্রীষ্মকালীন উৎসব। এই উৎসবের মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক উৎসব বিভিন্ন ফল উৎসব। সারা বছরের ভেতরে গ্রীষ্মকালে বেশি ভাগ ফল পাওয়া যায়। তাই গ্রীষ্মকালকে বলা হয় ফলের মৌসুম। আম, জাম, কলা, লিচু,তরমুজ, তাল এইসব ফল হলো গ্রীষ্মকালীন ফল।
আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের মুচির উপকারিতা-সম্পর্কে জানুন
এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ফুল উৎসব।বাংলা বছরের ১ম দিন অর্থাৎ বৈশাখ মাসের ১ম তারিখ পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়। এটা একটা গ্রীষ্মকালীন উৎসবের মধ্যে পড়ে।পহেলা বৈশাখ পৃথিবীর সকল বাংলা ভাষী মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় একটি অনুষ্ঠান। বৈশাখ মাস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রামে গঞ্জে মেলা অনুষ্ঠিত হয় ।এই মেলায় পুতুল নাচ, সার্কাস ,নাগরদোলা স্থান পায়।
পহেলা বৈশাখের দিন হালখাতা অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়।এই মাসে সকল পেশাদার মানুষ তাদের মহাজনের বকেয়া পরিষদ করেন আর মহাজন তাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে নতুন বছর শুরু করেন ।পহেলা বৈশাখের মেলায় বিভিন্ন মৃত শিল্প ও হস্তশিল্পের যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। পহেলা বৈশাখ পালনের প্রচলন শুরু হয় সম্রাট আকবর এর শাসনের আমল থেকে।
পহেলা বৈশাখের প্রধান আকর্ষণ হল বাউল শিল্পীদের গান। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রেডিও টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। পহেলা বৈশাখের দিনের সকালের খাবার পান্তা ইলিশ।
এই দিনে প্রত্যেকটি পরিবার তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো খাবার রান্না করেন ।এই দিনে মেয়েরা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরিধান করেন ।পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে বাঙালিরা তাদের নতুন বছরকে স্বাগত জানাই এবং একতা ও ঐক্যের বন্ধনকে আরো দূঢ় করে তোলে।
পহেলা বৈশাখ যার আরেক নাম বাংলা নববর্ষ। প্রতিবছর ১৪ই এপ্রিল বাংলাদেশে এটি পালন করা হয় আর ভারতে ১৫ এপ্রিলে পালন করা হয়।এ সময় দিনের বেশি সময় জুরে থাকে কাঠ ফাটা রোদ। এই ঋতুতে দিন বড় হয় আর রাত ছোট হয়। এ সময় মাঝেমাঝে বৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় হয় যার ফলে অনেক ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষতি হয়।
গ্রীষ্ম কালে কি কি ফল হয়
এটা ফলের মৌসুম। গ্রীষ্মকালে নানারকমের ফল পাওয়া যায়।আমাদের দেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল গ্রীষ্মকালে হয়। তাছাড়া ও বিভিন্ন রসালো ফল যেমন :আম, জাম,তরমুজ, আনারস, লিচুলিচু প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়।
গ্রীষ্মকালের ফুল
গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন সুগন্ধি ফুল যেমন: বেলি,জুই,রজনীগন্ধা, চাঁপা,টগর, গন্ধরাজ প্রভৃতি ফুল ফোটে।
গ্রীষ্মকালের শাকসবজি
গ্রীষ্মকালের শাক সবজির মধ্যে পাওয়া যায় পটল,কুমড়ো, ঝিঙ্গে, উচ্ছে ইত্যাদি।
গ্রীষ্মকালের উপকারিতা
গ্রীষ্মকালের দিন বড় হওয়ায় মানুষ তার প্রয়োজনীয় অনেক কাজ দিনে করতে পারে। আবার গ্রীষ্মের সময় বিদ্যালয়ের ছুটিতে অনেকে পরিবার নিয়ে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যায়। আর গ্রীষ্মের শুরুতেই বাংলা নববর্ষ পালন করা হয়।কোন কোন জায়গায় বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে চার পাঁচ দিন ধরে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। নববর্ষ পালনের মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষ গ্রীষ্মকালকে বরণ করে নেয় বিভিন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে।
গ্রীষ্ম ঋতু তোমার কেমন লাগে
এটা আমার প্রিয় ঋতু। এই ঋতুর রূপ বৈচিত্র আমায় মুগ্ধ করে। ছয়টি ঋতুর মধ্যে আর কোন ঋতুতে এত বৈচিত্রতা নেই। এই ঋতুতে অনেক উৎসব হয়, যা আর কোন ঋতুতে হয় না। এত গরম এত বৃষ্টি ঝড় তবুও এই ঋতুতে যেন শান্তি মেলে। প্রকৃতির সমস্ত সৌন্দর্য এই ঋতুতে যেন ঢেলে দেয়। তাইতো এই ঋতু আমার খুব ভালো লাগে।
গ্রীষ্মকালের অপকারিতা
গ্রীষ্মকালের প্রচন্ড রোদ্রের তাপের কারণে মানুষ খুব কষ্ট অনুভব করে।তাছাড়া অন্যান্য প্রাণীরাও কষ্ট পায়।সূর্যের প্রচন্ড উত্তাপে খাল বিল, নদী-নালা সব শুকিয়ে যায়। চারিদিকে পানির সংকট দেখা যায়।পানির অভাবে চাষাবাদের ক্ষতি হয় ।গরমের কারণে অনেক রোগ হয় ।যেমনঃডায়রিয়া, জ্বর ,কাশি ইত্যাদি। আবার হিট স্টোক করে ও অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়ে থাকে।
গ্রীষ্মকালে প্রচুর গরমে আমাদের কষ্ট দিলে ও গ্রীষ্মের কারণে শীতের আমেজ বুঝতে পারি। গ্রীষ্মকালের সবুজ শাক সবজি ও বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উপভোগ করি। ঋতু আমাদের জীবনের রং এর বাহার বয়ে আনে। এই ঋতুর বৈচিত্রের শেষ নেই। তাইতো সবার প্রানের সুর "এসো হে বৈশাখ এসো এসো"।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গ্রীষ্ম কালে কি কি উৎসব হয়,গ্রীষ্মঋতুর বৈশিষ্ট্য, গ্রীষ্মকালের উপকারিতা ও গ্রীষ্মকালের অপকারিতা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে। আপনি নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল পড়ে গ্রীষ্মকাল সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সুন্দরভাবে বুঝতে পেরেছেন।
এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে ও তথ্যবহুল মনে হয় তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু ও আত্মীয়দের সাথে শেয়ার করুন। এছাড়াও আপনি যদি তথ্য বিষয়ক আরো জানতে চান তবে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে রাখুন।
বিগ স্টার ইনফর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url